পৃথিবীর ইতিহাসে জীবজগৎ পাঁচবার নারকীয় তান্ডব দেখেছে। প্রতিবারই শতশত প্রজাতি বিলুপ্ত হয়েছে। এই তান্ডবগুলো ঘটেছে বহু শতকোটি বছর আগে।
অর্ডোভিসিয়ান যুগের শেষদিকে
ডেভোনিয়ান যুগের শেষদিকে
পার্মিয়ান-ট্রায়াসিক যুগান্তরে
ট্রায়াসিক-জুরাসিক যুগান্তরে
ক্রিটেশিয়াস-প্যালিওসিন যুগান্তরে
এই গণবিলুপ্তিগুলোকে একসাথে একনামে বলা হয়, “The Five Extinctions”। দুঃখের বিষয় হলো, গত কয়েকশত বছরে এইরকম শত শত জীবের প্রজাতি বিলুপ্ত হয়েছে পৃথিবী থেকে, কোনো উল্কার আঘাত কিংবা আগ্নেয়গিরির কারণে না। বরং নিজেদেরকে সৃষ্টির সেরা জীব দাবী করা মানুষের তান্ডবে। ছবির এই গণ্ডারের প্রজাতিটি ৫৫ মিলিয়ন ধরে পৃথিবীতে বাস করছিল। এই গণ্ডারটি ছিল তার প্রজাতির সর্বশেষ পুরুষ সদস্য।
১৯৭০-৮০ এর দশকে শিকারীদের কারণে এদের সংখ্যা একদমই কমে যায়। মাত্র এক ডজনের মতো বেঁচে ছিল। সেগুলোও বয়স হয়ে যাওয়াতে আর বংশবৃদ্ধি কিংবা নতুন করে প্রজাতির বিস্তার সম্ভব হয়নি। The World Wildlife Fund (WWF) নামক সংগঠন এখন এরকম বিভিন্ন বিলুপ্ত প্রজাতির দায়িত্ব নিয়েছে। তবে এই প্রজাতি’র প্রাণীদের সংখ্যা আগেই অনেক কমে যাওয়ায় বিলুপ্তি ঠেকানো যায়নি। অন্য প্রজাতির গণ্ডারের সাথে প্রজনন করিয়ে প্রজাতি রক্ষার চেষ্টাও করা হয়েছিল; লাভ হয়নি।
কয়েকবছর আগে এই শেষ পুরুষ গন্ডারটির মৃত্যুর মাধ্যমে মানুষের শ্রেষ্ঠত্বে বিলুপ্ত হওয়ার তালিকায় আরেক প্রজাতি সামিল হয়েছিলো। যদিও এই প্রজাতির দুই নারী সদস্য এখনো বেঁচে আছে কিন্তু IVF বা অন্য কোনো পদ্ধতিতে এই প্রজাতিকে পুনরায় ফিরিয়ে আনার কোনো সম্ভাবনা এখনও তৈরী হয়নি। এভাবেই চলছে পৃথিবীর ইতিহাসের ষষ্ঠ মহাবিলুপ্তি, “The Anthropocene Extinction”।