ডঙ্কা যখন বাজে তখন সেই ডঙ্কার শব্দ গঞ্জে গঞ্জে গুঞ্জিত হয়। এইতো কয়েকটা দিন হলো মাত্র, নতুন মানুষের ফসিল পাওয়া গেছে, ডেনিসোভানদের মতন হলেও আপাতদৃষ্টিতে এখনও এদের মানুষের নতুন প্রজাতি বলে শনাক্ত করা হচ্ছে। দুই লাইন লিখেছিলাম আমরা এ নিয়ে, ইতিমধ্যে ক্যালিফোর্নিয়ার এক প্রজাতির কাঠবিড়ালির মাঝে নতুন ধরণের বৈশিষ্ট্যের অভিযোজন দেখা গেছে।
Microtus californicus নামক এই কাঠবিড়ালির প্রজাতি সাধারণত ফলমূল খেয়ে জীবনধারণ করতো এতকাল যাবৎ। কিন্তু সম্প্রতি এদের মাঝে ইঁদুরের একটি প্রজাতিকে শিকার করে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করার প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে। এটা খুব বড় একটা পরিবর্তন। ডিসেম্বরের ১৮ তারিখ ‘Journal of Ethology’ তে এদের সম্পর্কে একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণা অনুযায়ী কাঠবিড়ালিরা মূলত বাদাম, ফলমূল খেয়ে জীবনধারণ করতো। তবে কিছু প্রজাতির মাঝে ছোট কীটপতঙ্গ থেকে শুরু করে ব্যাঙসহ অন্যান্য সরীসৃপকেও খাবার হিসেবে গ্রহণ প্রচলিত ছিলো। তবে কোনো স্তন্যপায়ী প্রাণীকে শিকার করে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করার নিদর্শন এই প্রথম।
এই বছরের গ্রীষ্মকাল থেকেই স্তন্যপায়ী প্রাণীদের শিকার করা শুরু হয়েছে এবং বিভিন্ন ভিডিও ও ছবি থেকে তা নিশ্চিত করা গিয়েছে। জুলাই মাসের প্রথম দু’সপ্তাহে শিকারের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছিল। মূলত সহজলভ্য খাবারের অভাব এবং সেসময় ইঁদুরের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াকে এই ঘটনার অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন বিজ্ঞানীরা। এছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তন মুখ্য ভূমিকা পালন করছে।
কোটি বছর আগের ইরেক্টাস হতে আজকের স্যাপিয়েন্স হওয়ার পিছনেও কিন্তু এমন খাদ্যাভাসের পরিবর্তন মুখ্য ভূমিকা রেখেছে। পতঙ্গ, ফলমূল খেয়ে বেঁচে থাকা আমাদের পূর্বপুরুষরা যখন বিভিন্ন প্রাণীর অস্থিমজ্জা এবং ধীরে ধীরে তাদের মাংস খেতে শুরু করলো তখন থেকেই আধুনিক মানুষের আগমনের যাত্রা একরকম শুরু হয়ে গিয়েছিলো। না, মাংস খাওয়ার ফলে এই কাঠবিড়ালি প্রজাতি কোটি বছর পর ‘মানুষ’ হয়ে যাবেনা, কিন্তু হ্যাঁ, এরকম অভিযোজন এবং বিবর্তনে কাঠবিড়ালিদের অবশ্যই অন্যমাত্রা প্রদান করার সক্ষমতা রাখে।