কল্পপরীক্ষা ০১: এক অসীম অন্ধকার মহাবিশ্ব। এই মহাবিশ্বে কোনো গ্রহ নেই, বড়-ছোটো উজ্জ্বল-অনুজ্জ্বল তারা-নক্ষত্র নেই, নেই কোনো ব্লাকহোল। কোথাও কিচ্ছুটি নেই। এই অন্ধকার মহাবিশ্বে আপনিই একমাত্র বস্তু, ভেসে আছেন অসীমের মাঝে। আচ্ছা বলুন তো আপনার গতীয় অবস্থাটা ঠিক কেমন হতে পারে? আপনি কি গতিশীল? আপনার কি ত্বরণ আছে? আপনি কি বনবন করে নিজের ভরকেন্দ্রগামী অক্ষের চারপাশে ঘুরছেন? কেমন অনুভব করবেন নিজের গতিপ্রকৃতি? ভাবুন, আবার ভাবুন।
কল্পপরীক্ষা ০২: আমাদের মহাবিশ্বের কোনো এক অবস্থানে এক বিশাল মহাজাগতিক বালতিভর্তি পানি উড়ে বেড়াচ্ছে কল্পনা করা যাক। এই বালতি যদি হঠাৎ ঘোরা শুরু করে তবে কী ঘটবে?
ঘূর্ণন শুরুর আগে পানি স্থির থাকবে। পানির উপরিতল হবে একদম সমতল।
ঘূর্ণন শুরুর পরে সামান্য কিছু মুহুর্ত বালতি ঘুরলেও দেখা যাবে পানি এখনও স্থির এবং উপরিতল সমতল।
ঘর্ষণের কারণে বালতির ঘূর্ণন এবার সম্পূর্ণ পানিতেই বন্ঠিত হবে, পানিও ঘুরতে থাকবে, উপরিতল সমতল থাকবেনা আর। হয়ে যাবে অবতল, কেন্দ্রবিমুখী বলের কারণে বালতির পানি মাঝের দিক থেকে বালতির দুপাশে সরে যাবে। ফলে বালতির দুপাশের পানি উঁচু হয়ে গেলেও মাঝের অংশের পানি হয়ে যাবে নিচু।
এই পরীক্ষাটা হাতেকলমে করা আহামরী কঠিন কিছু না। রান্নাঘরে যান। এক হাঁড়িতে পানি নিয়ে জোরে ঘুরান। পানির উপরিতল খেয়াল করুন, দেখবেন সমতল থেকে অবতল হয়ে গেছে।
এবার এই পরীক্ষাটা এক ধাপ এগিয়ে নেওয়া যাক। পরীক্ষার শুরুতে উল্লেখ করা বিশাল মহাজাগতিক বালতিটা এবার পানিসহ দৃশ্যকল্প ০১ এর মহাবিশ্বে পাঠিয়ে দেওয়া হলে কী ঘটতে পারে? এবারও কি পানির উপরিতল আগের মতোই ঘূর্ণনের সময় অবতল হয়ে যাবে? কেন্দ্রমুখী বল কি একইরকমভাবে কাজ করবে? আজ আমরা জানবো পদার্থবিজ্ঞানের দুনিয়ায় শতাব্দী পুরাতন এক রহস্যোদ্ধারের গল্প।
নিউটনের ঐশ্বরিক স্থান এবং পদার্থবিদ্যা: নিউটন সাহেব সর্বদা আপেক্ষিক গতির উপরে এক পরম গতি, পরম স্থিতির গুরুত্ব দিয়ে গেছেন। নিউটন যখন উপরের দৃশ্যকল্পগুলো সমাধান করেছিলেন তখন তিনি নিন্মরূপ ব্যাখা দাঁড়া করিয়েছিলেন।
১। নিউটনের প্রথম প্রশ্ন ছিলো, বালতির পানি আদতে কার সাপেক্ষে ঘুরছে? এই প্রশ্নের এক সম্ভাব্য উত্তর হতে পারে “বালতি”। বালতিকে সাপেক্ষ ধরে পানির ঘূর্ণন ব্যাখা করার চেষ্টা করা যাক। একদম শুরুতে বালতি স্থির, পানিও স্থির। বালতির সাপেক্ষে পানিও স্থির। ফলে কোনো কেন্দ্রবিমুখী বল নেই, পানির উপরিতল সমতল। এরপরে বালতি ঘোরা শুরু করলেও পানি স্থিরই। এই পয়েন্টে সমস্যা। বালতি যেহেতু ঘুরছে তাই বালতিকে সাপেক্ষ ধরে চিন্তা করলে বালতির সাপেক্ষে পানিও ঘুরছে বালতির বিপরীত দিকে। কিন্তু পানির উপরিতল কিন্তু সমতলই। অর্থাৎ আপেক্ষিক বেগ থাকলেও পানির উপরিতল অবতল হচ্ছেনা। আবার একটু পরেই ঘর্ষণের কারণে পানিও ঘোরা শুরু করবে। পানিও ঘুরছে, বালতিও ঘুরছে। বালতির সাপেক্ষে পানির ঘূর্ণন হিসাব করলে বলা যায় কোনো আপেক্ষিক ঘূর্ণন নাই। আপেক্ষিক ঘূর্ণন না থাকলেও দেখা যাবে পানির উপরিতল ঠিকই অবতল আকৃতি ধারণ করেছে। তাহলে দেখা যাচ্ছে, বালতির সাপেক্ষে ঘূর্নন থাকলেও পানির উপরিতল সমতল থাকছে আবার কখনো ঘূর্ণন না থাকলেও উপরিতল অবতল হয়ে যাচ্ছে। তাই বালতিকে সাপেক্ষ ধরা যাবেনা বলে সিদ্ধান্ত নিলেন মহামতি নিউটন।
২। নিউটন এবার দৃশ্যকল্প-০১ নিয়ে চিন্তা করলেন। নিউটন বললেন, একদম পরমশূন্যতার মাঝে যখন কোনো ব্যক্তি অবস্থান করবে তখন সে নিজের গতিপ্রকৃতি অনুভব করতে পারবে। যদি উক্ত ব্যক্তি ঘোরা শুরু করে সে অনুভব করবে তার হাত পা শরীর থেকে বাইরের চারদিকে ছড়িয়ে যাচ্ছে অদৃশ্য কেন্দ্রবিমুখী বলের কারণে। ঘূর্ণন বন্ধ হলে এই বল আর ক্রিয়া করবেনা। অর্থাৎ নিউটনের চিন্তানুসারে, অতল অন্ধকারে আপেক্ষিক বেগ পরিমাপের কোনো সাপেক্ষ থাকুক বা না থাকুক, কোনোকিছুর ঘূর্ণন ঠিকই শনাক্ত করা যাবে। ঠিকই তার উপর কেন্দ্রবিমুখী বল ক্রিয়া করবে। নিউটন দৃশ্যকল্প-০২ এর শেষে করা প্রশ্নের উত্তরও ঠিক একই দিলেন। বললেন, এমন মহাবিশ্ব যেখানে ঐ মহাজাগতিক বালতি ব্যতীত আর কিছুই নেই সেখানেও শুরুতে পানির উপরিতল সমতল থাকবে। বালতি ঘোরা শুরু করলে একসময় ঘূর্ণনের ফলে বালতির উপরতিলের আকৃতি অবতলের মতো হয়ে যাবে। ঠিক যেমনটা আমাদের মহাবিশ্বে ঘটছে।
৩। প্রশ্ন কিন্তু এখনো থেকে যায়, আসলে ঘূর্ণন হচ্ছেটা কার সাপেক্ষে? বালতি সম্ভাব্য সাপেক্ষের তালিকা থেকে বাদ। অসীম অন্ধকার মহাবিশ্বে বালতি এবং পানি ছাড়া আর কিছু নাইও। তাহলে পানি কার সাপেক্ষে আপেক্ষিক ঘূর্ণনের ফলে এরকম অবতল পৃষ্ঠ লাভ করবে? নিউটন এই প্রশ্নের উত্তর দিলেন, “পরম স্থান (Absolute Space)”। নিউটন যুক্তি দিলেন: স্থান, আমরা ধরতে পারিনা, গন্ধ নিতে পারিনা, খেয়ে দেখতে পারিনা, তবু আমরা জানি স্থান বলে কিছু একটার অস্তিত্ব আছে। এই স্থানই পরম সাপেক্ষ তথা পরম প্রসঙ্গ কাঠামো। যেকোনো বস্তুর গতি, স্থিতি, ত্বরণ, বেগ, ঘূর্ণন সবকিছুই এই স্থানের সাপেক্ষে সংঘটিত হয়। নিউটন বললেন: উভয় মহাবিশ্বেই বালতি যখন স্থির ছিলো, তখন বালতির সাথে সাথে পানিও পরম স্থানের সাপেক্ষে স্থির ছিলো। বালতি ঘোরা শুরু করলেও একদম প্রথমে পানি অল্প সময়ের জন্য স্থির ছিলো। বালতির ঘূর্ণন গতি কিংবা পানির স্থির থাকা- উভয়ই পরম স্থানের সাপেক্ষে। এজন্য বালতি ঘুরলেও পানির পৃষ্ঠ ছিলো সমতল। এরপর যখন পানিও ঘোরা শুরু করলো পরম স্থানের সাপেক্ষে তখন পানির উপরিপৃষ্ঠ অবতল আকৃতি লাভ করলো। একদম নিঁখুতভাবে এই বালতি পরীক্ষার সকল পর্যবেক্ষণের সাথে নিউটনের প্রদত্ত যুক্তিগুলোর সমন্বয় ঘটে যদি আমরা সাপেক্ষ হিসেবে পরম স্থান বলে কোনো কিছুকে চিন্তা করে নিই।
৪। পদার্থবিদ্যার জগতে কোনো কিছুই “আছে, মেনে নেও” এই নীতি প্রযোজ্য হয়না। যেকোনো নতুন শব্দ বা টার্মেরই নিঁখুত সংজ্ঞায়ন প্রয়োজন। তেমনই নিউটনের বলা “পরম স্থানের” ও নিঁখুত সংজ্ঞা দরকার ছিলো। কিন্তু নিউটন বরাবরই এই ব্যাপারে যথেষ্ট উদাসীন এবং পক্ষপাতদুষ্ট ছিলেন। নিউটন শুরুতে বলতেন, “I don’t define time, space, place and motion, as they are well known to all.” যদিও পরবর্তীতে তিনি পরমস্থানের সংজ্ঞা দেওয়ার একটি চেষ্টা করেছিলেন, তবে তাও ছিলো যথেষ্ট ত্রুটিপূর্ণ। তিনি বলেন, “পরমস্থান সর্বদা একইরকম থাকে। কোনোরকম সাপেক্ষ থাকুক বা না থাকুক, পরমস্থান সর্বদা স্থির।” মূলত নিউটনের কথার তাৎপর্য এরূপ, “পরমস্থান আছে মানে আছে। অনুভব করতে পারো? করতে পারলে করো, নাহলে ভাগো!” নিউটন পরমস্থানকে ঈশ্বরের সাথেও জুড়ে দিয়েছিলেন যেটা আমরা ‘গড ইন দ্যা গ্যাপস’ বলি। নিউটনের গুরুসম ছিলেন তৎকালীন আধ্যাত্মবাদী দার্শনিক হেনরি মুর। হেনরি মুর বিশ্বাস করতেন এই মহাবিশ্বে এমন কোনো স্থান থাকা সম্ভব না যেটা একদমই পরম শূণ্য, কোথাও কিচ্ছুটি নেই, না কোনো বস্তু না কোনো শক্তি। নিউটনও হেনরি মুরের এই মতবাদকে প্রাধান্য দিয়ে পরমস্থানের ধারণা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেন। নিউটন বলেন, “এই মহাবিশ্বে বস্তুর পাশাপাশি প্রচুর ঐশ্বরিক, আধ্যাত্মিক, অলৌকিক জিনিসও রয়েছে। এসকল ঐশ্বরিক জিনিসপাতি কখনো সাপেক্ষের উপর নির্ভর করে কাজ করেনা, নিজেও সাপেক্ষ হিসেবে কাজ করেনা, কোনো বস্তুর গতিবিধির উপর এসকল ঐশ্বরিক জিনিসের কোনো প্রভাব নেই। তাই পরমস্থান বলতে এমন শূণ্যস্থান বুঝায় যেখানে শুধু ঈশ্বর এবং ঐশ্বরিক অস্তিত্বের বিচরণ।”
গতি কী, স্থিতি কী- এরূপ প্রশ্নের নিউটনীয় ধারণা প্রতিষ্ঠার পর শতাব্দী পেরিয়ে গেলো। নিউটনের পরম শূণ্যস্থানের ধারণা নিয়ে প্রচুর তর্ক বিতর্ক হলো। কিন্তু অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি এমন কিছু হলো যেটাকে এক কথায় যুগান্তকারী বলে আখ্যা দিতেই হবে। নিউটনের পরম শূন্যতার ধারণা শুধু নয় আমাদের গতি-স্থিতির “কমন সেন্স” কেও প্রশ্নবিদ্ধ করলেন অস্ট্রিয়ান পদার্থবিদ আর্নস্ট ম্যাক। তিনি নতুন করে প্রসঙ্গ কাঠামো, শূণ্যস্থান এবং আপেক্ষিকতার ভাবনা ভাবতে শেখালেন। তিনি উল্লিখিত কল্পপরীক্ষার দ্বিতীয়টির সমাধান একই দিলেও প্রথমটিকে একটু অন্যভাবে চিন্তা করলেন। তিনি সবকিছুর ব্যাখাই বদলে দিলেন।
১। ম্যাকের ব্যাখা অনুসারে দ্বিতীয় কল্পপরীক্ষার ক্ষেত্রে যা ঘটবে: এক অসীম অন্ধকার মহাশূণ্যে আপনি ভেসে ভেসে এক দূর নক্ষত্রকে দেখছেন। সেই নক্ষত্র আপনার চোখের ঠিক সামনে। আপনিও স্থির, নক্ষত্রও স্থির, সবকিছু যেনো চিরকালের জন্য থেমে আছে। হঠাৎ আপনি ঘুরতে শুরু করলেন। আপনি দেখবেন নক্ষত্রটিও ঘুরছে। আপনার সাপেক্ষে নক্ষত্রটি এক বৃত্তাকার পথ পরিক্রমণ করবে। এসময় আপনি নিজের ঘূর্ণনগতি অনুভব করবেন। আপনার হাত পা চারদিকে ছড়িয়ে যাবে টানটান হয়ে, এই টানটান হওয়ার কারণ যে বল তাকে বলে কেন্দ্রবিমুখী বল। চোখ বন্ধ করে থাকলেও এই বল আপনি অনুভব করবেন, করবেনই।
২। প্রথম কল্পপরীক্ষা সম্পর্কে নিউটনের সিদ্ধান্তও এইরকম ছিলো। কোথাও কিছু না থাকলেও আমরা ঘূর্ণন অনুভব করবো কারণ আমরা পরম শূন্যস্থানের সাপেক্ষে ঘুরছি। আমাদের হাত পা চারদিকে টানটান হয়ে যাবে কেন্দ্রবিমুখী বলের জন্য। কিন্তু ম্যাক সাহেব এখানে দ্বিমত পোষণ করলেন। ম্যাক বললেন, পরম শূণ্যস্থানের সাপেক্ষে কোনো কিছুর গতি নির্ধারণ করা, অনুভব করা কিংবা গতি-স্থিতির পার্থক্য নিরূপণ করা একদমই অসম্ভব। শূণ্যস্থান যেখানে আপনি ছাড়া আর কোনোকিছুই নাই সেখানে আপনি স্থির থাকেন বা ঘূর্ণনশীল- কিচ্ছুটি যায় আসবেনা। আপনি কিছুই অনুভব করবেন না। আপনি নিজেকে গতিশীল দাবী করেন কিংবা স্থির কিংবা ঘূর্ণনশীল- উভয় ক্ষেত্রেই আপনার অনুভূতি হবে একইরকম। কোনো প্রকার কেন্দ্রবিমুখী বল আপনার হাত পা টানটান করে ছড়িয়ে দিবেনা। আপনি অনুভবই করবেন না আপনি কিরকম গতীয় অবস্থায় রয়েছেন। অর্থাৎ, আপনার গতি বা ঘূর্ণন নির্ভর করতেছে আপনি কার সাপেক্ষে ঘুরতেছেন তার উপর। কোনো সাপেক্ষ না থাকলে আপনার কোনো গতীয় অবস্থাও নেই, আপনি না স্থির, না গতিশীল, আপনি কিছুই না।
৩। ম্যাকের পরবর্তী দাবী ছিলো আরও অদ্ভুত! ম্যাক প্রথম কল্পপরীক্ষাটাকে আরও কয়েক ধাপে চিন্তা করেন। একটু উদাহরণের সাহায্যে তার চিন্তাধারাটা বোঝার চেষ্টা করি। ধরুন, আমাদের কাছে চারটি ভিন্ন ভিন্ন মহাবিশ্ব রয়েছে। প্রথম মহাবিশ্বে m ভরের একটিমাত্র নক্ষত্র রয়েছে। দ্বিতীয় মহাবিশ্বে m ভরের দুটি, তৃতীয় মহাবিশ্বে m ভরের পঞ্চাশটি নক্ষত্র রয়েছে এবং চতুর্থ মহাবিশ্বে কিছুই নেই, আবার সেই পরমশূণ্যতা। কোনো মহাবিশ্বে যদি একটা নক্ষত্র থাকে তবে ঘূর্ণনের সময় অনুভূত কেন্দ্রবিমুখী বল যতটা শক্তিশালী হবে, দুটি নক্ষত্র থাকলে এই বলের ক্রিয়া আরও বেশি হবে। পঞ্চাশটি নক্ষত্র হলে আরও আরও বেশি হবে। কোনো নক্ষত্র না থাকলে এই বল হবে শূণ্য। অর্থাৎ কোনো মহাবিশ্বে অবস্থিত কোনেকিছুর স্থিতি-গতি পরিমাপের বেলায় উক্ত “কোনোকিছু” ব্যতীত অন্য বস্তু তথা ভরের উপস্থিতি সুইচের মতো কাজ করে। উপস্থিত থাকলে সুইচ চালু, আপনি তখন সহজেই স্থির এবং গতিশীল অবস্থা শনাক্ত করতে পারবেন। অনুপস্থিত থাকলে স্থির এবং গতিশীল অবস্থা শনাক্ত করা সম্ভব হবেনা। বস্তু তথা ভরের পরিমাণ যত যত বেশি হবে গতীয় অবস্থা তত সহজে শনাক্ত করা যাবে। ভরের পরিমাণ, উপস্থিতি, অনুপস্থিতিই আসল বিষয়, এইসব পরম শূণ্যস্থান, শূণ্যস্থানে ঈশ্বরের বিচরণ- এক কথায় ‘ফালতু’!
এখন প্রশ্ন হলো এই দুই মহারথীর মধ্যে কে সঠিক? নিউটন নাকি ম্যাক? আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানে ম্যাকের ধ্যানধারণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ভরের উপস্থিতি এবং বন্ঠনের উপর নির্ভর করে কোনো মহাবিশ্বে উপস্থিত বস্তুর গতীয় অবস্থা, জড়তা, বল। ম্যাকের এই ধারণা পরবর্তীতে আইনস্টাইন তার সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বেও ব্যবহার করেছেন। আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানে নিউটনের পরম শূণ্যস্থানের কোনো মূল্য নেই, একটা অবাস্তব পরিত্যক্ত ধারণামাত্র। নির্দ্বিধায় এখানে বাজিমাত আর্নস্ট ম্যাকের।
পদার্থবিজ্ঞানের এই নতুন প্রবন্ধ সমগ্রে আপনাদের স্বাগতম। এই সিরিজের পরবর্তী প্রবন্ধ করতে আমাদের সাথেই থাকুন। ভালো লাগলে শেয়ার করুন। নৃতত্ত্ব বিষয়ক আমাদের প্রবন্ধগুলি পড়তে আমাদের পেইজ কিংবা এই গ্রুপে আমাদের প্রোফাইল ঘুরে আসুন। ধন্যবাদ।
লেখক: তিকতালিকীয় সদস্যবৃন্দ
কপিরাইট: তিকতালিক-Tiktaalik
Reference:
Fabric of Cosmos by Brian Greene
Mach’s Principle, Wikipedia
Posted inআপেক্ষিকতার তত্ত্ব পদার্থবিজ্ঞান বিবিধ
নিউটন বনাম ম্যাক
